সারাদেশ

ঘরো খাওন নাই ৮ সন্তান লইয়া কষ্টে আছি, চন্ডিগড় গ্রামের হাজেরা খাতুন

  প্রতিনিধি ১৮ মে ২০২৩ , ২:৪০:৫৭ প্রিন্ট সংস্করণ

দুর্গাপুর (নেত্রকোনা) প্রতিনিধি:

ঘরো খাওন নাই, বাচ্চাগুলাকে কী খাওয়াই। সকালে ভাত রাঁধছি কিন্তু তরকারি নাই, দুপুর হইয়া গেছে বাচ্চাগুলার কপালে খাওন জুটে নাই, ৮ সন্তান লইয়া কষ্টে আছি।

কথাগুলো বলছিলেন নেত্রকোনার দুর্গাপুর উপজেলার চন্ডিগড় ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের চন্ডিগড় গ্রামের হাজেরা খাতুন (৫০)।

মহামারি করোনাকালে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন স্বামী রুহুল আলী। এরপর থেকেই সংসারে নেমে আসে সীমাহীন অভাব। হাজেরা খাতুনের ৫ ছেলে সন্তান ও ৫ মেয়ে সন্তান রয়েছে। 

এর মধ্যে দুই মেয়েকে কোনোভাবে দিয়েছেন বিয়ে। তবে বর্তমানে ঘরের ৮ সন্তান নিয়ে জীবন কাটছে খুবই কষ্টে। ৮ সন্তানের মধ্যে ৫ ছেলের বয়স চার থেকে এগারো বছর এবং ৩ মেয়ের বয়স পনেরো থেকে আঠারো বছর। রোজগার করার মতো নেই কেউ। তাই পেটের তাগিদে মানুষের পুরোনো কাপড় কম দামে কিনে এনে গ্রামে ঘুরে ঘুরে বিক্রি করেও দুই বেলা ঠিকমতো সন্তানের মুখে খাবার তুলে দিতে পারছেন না। অভাবের তাড়নায় ছোট বাচ্চাগুলো দত্তক দিতেও সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন।

হাজেরা খাতুন জানান, স্বামীর শেষ সম্বল রেখে যাওয়া বসবাস করা আধাকাটা বাড়ির জায়গা ছাড়া আর কোনো কিছুই নেই। এই জায়গাতেই একটি টিনের ভাঙা ঘরে সন্তানগুলো নিয়ে বেঁচে আছেন। স্বামী মারা যাওয়ার পর বিধবা ভাতার কিছু টাকা পান যা দিয়ে ঢাকা থেকে পুরোনো কাপড় কিনে এনে গ্রামে ঘুরে ঘুরে বিক্রি করেন। ১৫০০ টাকার কাপড় আনলে যা বিক্রি করতে সময় লাগে ১৫ দিনের মতো তার মধ্যে থেকে আয় ৪০০ থেকে ৫০০ টাকার মতো। তা দিয়ে হাজেরা ও ৮ সদস্যের সংসার চালানো দায় হয়ে পড়েছে।

তিনি আরো বলেন, একখণ্ড জমির ওপর দাঁড়ানো ভাঙা একটা টিনের ঘরে কোনোভাবে বেঁচে আছি। এহন তো ঝড়-তুফানে অনেক ভয় লাগে। আত্মীয়-স্বজনরাও অনেক গরিব কেউ যে সহযোগিতা করব তা-ও নাই। একটু ভালো খাবার তো কপালে জোটেই না বরং চাল থাকলে তরকারি থাকে না। এভাবেই কোনো রকমে খেয়ে না খেয়ে বেঁচে আছি। এমন অবস্থায় যদি কিছুটা সহযোগিতা পাইলে সন্তানগুলোরে নিয়ে একটু স্বস্তিতে বাঁচতে পারতাম।

আরও খবর

Sponsered content

WP Twitter Auto Publish Powered By : XYZScripts.com