সারাদেশ

চট্টগ্রামে নিজ ঘর থেকে গৃহবধূর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার, পরিবারের দাবি হত্যা

  প্রতিনিধি ১ মে ২০২৩ , ১:৫৫:১৭ প্রিন্ট সংস্করণ

পটিয়া (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি:

চট্টগ্রামের পটিয়ায় জেরিন আকতার (২২) নামে এক গৃহবধূর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে । রবিবার (৩০ এপ্রিল) সন্ধ্যায় উপজেলার কচুয়াই ইউনিয়নের শেখ মোহাম্মদ পাড়ার নিজ ঘর থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় লাশ উদ্ধার করা হয়। ঘটনার পর থেকেই নিহত গৃহবধূর প্রবাসী স্বামী দিদারুল আলমসহ পরিবারের লোকজন পলাতক রয়েছে।

স্থানীয়রা জানান, উপজেলার ছনহরা ইউনিয়নের আলামদার পাড়ার মটপাড়া গ্রামের আমির আলামদারের বড় মেয়ে জেরিন আকতারের বিয়ে হয় একই উপজেলার কচুয়াই ইউনিয়নের শেখ মোহাম্মদ পাড়ার মৃত সালামত আলী খানের দুবাই প্রবাসী ছেলে দিদারুল আলমের সঙ্গে ২০২০ সালের মার্চে করোনাকালীন সময়ে। 

রবিবার বাড়ির ছোট ছোট ছেলে-মেয়েরা সন্ধ্যায় ঘরের জানালা দিয়ে দেখতে পান গৃহবধূ জেরিন আকতারের ঝুলন্ত লাশ দেখতে পান। এসময় তারা চিৎকার-চেঁচামেচি করলে আশপাশের লোকজন এসে দ্রুত রশিতে ঝুলানো অবস্থায় গৃহবধূ জেরিন আকতারকে নিচে নামান। 

এদিকে রাত ১০টার দিকে পটিয়া থানা পুলিশ খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন ওসি প্রিটন সরকার, ওসি (তদন্ত) সাইফুল ইসলাম, উপপরিদর্শক বিভাস কুমার সাহাসহ পুলিশের একটি টিম। এসময় তারা লাশটির সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে লাশটির ময়নাতদন্তের জন্য রাতেই চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছেন।

তবে নিহত গৃহবধূর মা জেসমিন আকতার অভিযোগ করে কালের কণ্ঠকে বলেন, আত্মহত্যা নয় আমার মেয়ে জেরিন আকতারকে তার স্বামীসহ পরিবারের লোকজন মেরে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে দিয়েছে। 

তিনি আরো বলেন, আমার মেয়েকে আগ থেকেই মানসিকভাবে নানা নির্যাতন করতেন তার শ্বশুরবাড়ির লোকজন। আমি আমার মেয়েকে বিভিন্নভাবে সান্ত্বনা দিতাম। তার দুই বছর বয়সী হাসানুজ্জামান অভি নামের একটি ছেলে সন্তান রয়েছে।

এদিকে নিহত গৃহবধূর পরিবার সূত্রে জানা যায়, যেহেতু করোনাকালীন বিধিনিষেধের সময় তাদের বিয়ে হয়েছিল তখন কোনো সামাজিকভাবে অনুষ্ঠান করা হয়নি। কথা ছিল পরবর্তী সময়ের যেকোনো দিন বেয়াই ভাতা স্বরূপ বরপক্ষের লোকজনকে দাওয়াত দিয়ে খাওয়ানো হবে। এ নিয়ে তাদের মেয়েকে বিভিন্ন সময় শ্বশুরবাড়ির লোকজন জ্বালাতন করতেন। ৬ এপ্রিল স্বামী দিদারুল আলম দুবাই থেকে দেশে আসলে নির্যাতনের মাত্রা আরো বেড়ে যায়। ১৭ মে দিদারুল আবারো বিদেশে ফিরে যাওয়ার কথা। তাই তার আগেই সেই দাওয়াত খাওয়াতে চাপ সৃষ্টি করে গৃহবধূর পরিবারকে। তারা তাদের কথা মতো আগামী ১৪ মে তাদের বাড়িতে দাওয়াত খাওয়ার দিনক্ষণ ঠিক করেন। কিন্তু তার আগেই তাদের মেয়েকে মেরে ফেলার অভিযোগ।

নিহত গৃহবধূ জেরিন আকতার উপজেলার সালেহ নুর ডিগ্রী কলেজের ডিগ্রী ফাইনাল বর্ষের ছাত্রী বলে জানা গেছে।

পটিয়া থানার ওসি প্রিটন সরকার কালের কণ্ঠকে বলেন, রাতেই ঘটনাস্থল থেকে লাশটির সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। লাশটির ময়নাতদন্তের জন্য রাতেই চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পর বলা যাবে এটি হত্যা নাকি আত্মহত্যা। নিহতের পরিবারের কেউ এ ব্যাপারে অভিযোগ করলে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আরও খবর

Sponsered content

WP Twitter Auto Publish Powered By : XYZScripts.com