চরফ্যাশন (ভোলা) প্রতিনিধি: ২৬ জুলাই ২০২৩ , ১:২৯:১৬ প্রিন্ট সংস্করণ
চরফ্যাশন (ভোলা) প্রতিনিধি: মেয়ে মিথিলা জাহানকে অপ্রাপ্ত বয়স্কা দেখিয়ে প্রেমিক তথা প্রথম স্বামী আতিকুর রহমান সাগরকে সাজানো গুছানো অপহরণের মামলায় ফাঁসিয়ে মেয়েকে অন্যত্র বিয়ে দিয়েছেন মেয়ের মা শামীমা মাওলা। এমন কান্ড ঘটাতে গিয়ে মেয়ে মিথিলা জাহান এর পৃথক ৪টি জন্ম নিবন্ধন বের করার অভিযোগ উঠেছে কথিত অপহরণ মামলার ভিক্টিম মিথিলা জাহানের মা শামীমা মাওলার বিরুদ্ধে। পৃথক ৪টি জম্ম নিবন্ধনে বাবা ও মায়ের নাম এবং জন্ম তারিখে কিছু পরিবর্তন করা হয়েছে। প্রথম স্বামীকে ফাঁসিয়ে অন্যত্র মেয়েকে বিয়ে দিতে গিয়ে বরিশালের মুলাদি উপজেলার লক্ষীপুর গ্রামের মৃত কাজি গোলাম মাওলার স্ত্রী শামীমা মাওলার বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ উঠেছে। মেয়ে মিথিলা জাহানকে অপহরণের অভিযোগে চরফ্যাশনের নাংলাপাতা গ্রামের অতিকুর রহমান, তার বাবা বেল্লাল হোসেন এবং মাতা ফিরোজা বেগমকে আসামী করে বরিশাল কোতওয়ালী থানায় গত বছরের ১৯ মার্চ এই মামলাটি দায়ের করেন মা শামীমা মাওলা। অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, মুলাদীর মেয়ে মিথিলা ঢাকার একটি কলেজের উচ্চ মাধ্যমিকের শিক্ষার্থী। কোচিং করার জন্য ঢাকায় আসেন ভোলার চরফ্যাশনের নাংলাপাতা গ্রামের শিক্ষার্থী আতিকুর রহমান সাগর। সেখানে দুজনের পরিচয়, প্রেম এবং পালিয়ে বিয়ে করে। মিথিলার মা শামীমা মাওলা এই বিয়ে মেনে নিতে পারেননি। বরিশাল কোতওয়ালী থানায় দায়েরকৃত শামীমা মাওলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, গত বছরের ১১ মার্চ বরিশাল ভাইয়ের বাসায় বেড়াতে গেলে সেখান থেকে জোরপূর্বক মেয়ে মিথিলাকে তুলে নেন আতিকুর রহমান সাগর। ওই মামলায় অতিকুর রহমান সাগর,তার বাবা বেল্লাল হোসেন এবং মাতা ফিরোজা বেগমকে আসামী করা হয়। পুলিশ আতিকুর রহামানকে কিশোর অপরাধী হিসেবে গ্রেপ্তার করে হেফাজতে পাঠান। আতিক এখন জামিনে আছে। এদিকে মিথিলার মা শামীমা মাওলা মেয়ের প্রেমিক থেকে প্রথম স্বামী আতিকুর রহমানকে মামলায় ফাঁসিয়ে মেয়েকে গত বছরের মার্চ মাসে অন্যত্র বিয়ে দিয়েছেন। অভিযোগ উঠেছে, মুলাদী উপজেলার চর কালখান ইউনিয়ন এবং ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের ব্লক-৪ থেকে মিথিলা জাহানের নামে পৃথক ৩টি জন্মনিবন্ধন বের করেন মা শামীমা মাওলা। একটি জন্ম নিবন্ধনে মিথিলাকে অপ্রাপ্ত বয়স্ক দেখিয়ে তা ব্যবহার করে প্রথম স্বামী তথা প্রেমিক আতিকুর রহমানের বিরুদ্ধে মামলায় ব্যবহার করা হয়েছে। পরে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন থেকে পৃথক দুটি জন্মনিবন্ধন বের করে সেগুলোতে মিথিলাকে প্রাপ্ত বয়স্কা দেখানো হয়েছে। ওই জম্মনিবন্ধন ব্যবহার করে মিথিলাকে ফুফাতো ভাই মাহমুদুল হাসান সিদ্দিকীর সাথে দ্বিতীয় বিয়ে দেয়া হয়েছে। এসব জন্ম নিবন্ধনে মিথিলার নাম পরিবর্তন করে মিথিলা জাহান সাদিয়া, মরিয়ম জাহান সারা দেখানো হয়েছে। একই ভাবে মিথিলার মায়ের নাম শামীমা মাওলা, শামীমা জি. মাওলা এবং বাবার নাম গোলাম মাওলা ও কাজি গোলাম মাওলা দেখানো হয়েছে। এসব জন্ম নিবন্ধনে মিথিলার জন্ম তারিখ ১ জানুয়ারী ২০০৬ এবং ১০ জানুয়ারী ২০০৪ দেখানো হয়েছে। আতিকুর রহমান সাগর অভিযোগ করেন, মিথিলা জাহান আমার বিবাহিত স্ত্রী এবং তার সাথে আমার বৈবাহিক সম্পর্ক এখনো বৈধ। কিন্ত তার মা শামীমা মাওলা আমাকে মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে মেয়েকে অন্যত্র বিয়ে দিয়েছেন। আমি মিথিলার নামীয় একাধিক প্রমাণ্য দলিল তদন্তসংশ্লিষ্টদের দিয়েছি তারপরও তদন্ত সংশ্লিষ্টরা তদন্তের নামে অযৌক্তিক সময়ক্ষেপনের মাধ্যমে আমাকে হয়রানী করছে। মা শামীমা মাওলা জানান, আমার মেয়েকে অপহরণ করার ঘটনায় মামলা দেয়া হয়েছে। ওই ছেলেকে মেয়ে তালাক দেয়া পরে অন্যত্র বিয়ে দেয়া হয়েছে। মামলা তদন্তকারী কর্মকর্তা বিজয় মল জানান, একটি জন্ম নিবন্ধন দিয়ে মামলাটি করা হয়েছিলো। ওই জন্ম নিবন্ধনে মেয়েটি অপ্রাপ্ত বয়স্ক ছিলো। মামলা প্রায় ৭ মাস আগে চার্জশিট দেয়া হয়েছে। পরবর্তী ব্যবস্থা আদালত নিবে।