ইসলাম ও জীবন

চুল কাটানোর সুন্নত তরিকা

  প্রতিনিধি ১৯ এপ্রিল ২০২৩ , ৭:০২:০৯ প্রিন্ট সংস্করণ

মাইমুনা আক্তার, নিজস্ব প্রতিবেদক:

মানুষ স্বভাবজাতভাবেই অনুকরণপ্রিয়। প্রতিটি কাজেই তারা কাউকে না কাউকে অনুকরণ করতে পছন্দ করে। পোশাক থেকে শুরু করে চুলের স্টাইলেও মানুষের অনুকরণীয় ব্যক্তিত্ব পাওয়া যায়। তবে ভুল মানুষের অনুকরণ করলে বিপথগামী হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। রাসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি কোনো সম্প্রদায়ের অনুকরণ করবে, সে তাদের অন্তর্ভুক্ত হবে।(আবু দাউদ, হাদিস : ৪০৩১)

মুমিনের জীবনে একমাত্র অনুকরণীয় ব্যক্তিত্ব মহানবী (সা.) কিংবা যাঁরা মহানবী (সা.)-এর সুন্নত মোতাবেক জীবন গড়েছেন। এর বিপরীত মেরুর কাউকে অনুকরণ করতে গেলে হাদিসের ভাষ্যমতে বিপদে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।

সামনে ঈদ। পবিত্র ঈদে নিজেকে পরিপাটি রাখতে প্রত্যেক মানুষই সেলুনে ভিড় করবে। অনেকে আবার নতুন নতুন হেয়ারস্টাইল খুঁজবে।

বর্তমানে আমাদের দেশে যে হেয়ারস্টাইলগুলো জনপ্রিয়, তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে—শর্ট কাট বা আন্ডার কাট, ক্লাসিক কাট, ফেড কাট, ক্রু কাট, বাজ কাট, লেয়ার স্পাইক, ইমো সুইপ ইত্যাদি। পবিত্র ঈদের মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত করার জন্য নিজেকে পরিপাটি করতে গিয়ে এমন কোনো স্টাইলে চুল কাটানো উচিত হবে না, যেভাবে চুল কাটাতে নবীজি (সা.) নিষেধ করেছেন।

ইবনে ওমর (রা.) বলেন, আমি রাসুল (সা.)-কে ‘কাজা’ থেকে নিষেধ করতে শুনেছি। (বর্ণনাকারী ওবায়দুল্লাহ বলেন) আমি জিজ্ঞেস করলাম, ‘কাজা’ কী? তখন আবদুল্লাহ (রা.) আমাদের ইঙ্গিতে দেখিয়ে বললেন, শিশুদের যখন চুল কামানো হয়, তখন এখানে-ওখানে চুল রেখে দেয়। এ কথা বলার সময় ওবায়দুল্লাহ তাঁর কপাল ও মাথার দুই পাশে দেখালেন। ওবায়দুল্লাহকে আবার জিজ্ঞেস করা হলো, বালক ও বালিকার জন্য কি একই নির্দেশ? তিনি বলেন, আমি জানি না। এভাবে তিনি বালকের কথা বলেছেন।

ওবায়দুল্লাহ বলেন, আমি এ কথা আবার জিজ্ঞেস করলাম। তিনি বলেন, পুরুষ শিশুর মাথার সামনের ও পেছনের দিকের চুল কামানো দোষণীয় নয়। আর (অন্য এক ব্যাখ্যা মতে) ‘কাজা’ বলা হয়, কপালের ওপরে কিছু চুল রেখে বাকি মাথার কোথাও চুল না রাখা। তেমনিভাবে মাথার চুল এক পাশ থেকে অথবা অন্য পাশ থেকে কাটা। (বুখারি, হাদিস : ৫৯২১)

চুল কাটার সুন্নত পদ্ধতি

পুরুষের চুল রাখা ও কাটার ব্যাপারে শরিয়ত তিনটি পদ্ধতি নির্ধারণ করে দিয়েছে। ক. বাবরি চুল রাখা। বাবরি চুল রাখার তিনটি সুন্নত পদ্ধতি রয়েছে—

১.  ওয়াফরা তথা কানের লতি পর্যন্ত চুল রাখা। (আবু দাউদ, হাদিস : ৪১৮৫)

২.  লিম্মা তথা ঘাড় ও কানের লতির মাঝামাঝি পর্যন্ত চুল রাখা। (আবু দাউদ, হাদিস : ৪১৮৭)

৩.  জুম্মা তথা ঘাড় পর্যন্ত রাখা। (আবু দাউদ, হাদিস : ৪১৮৩)

খ. মুণ্ডিয়ে ফেলা। ইসলামের দৃষ্টিতে মাথা মুণ্ডিয়ে ফেলাও সুন্নত। (ফাতাওয়ায়ে মাহমুদিয়া : ৫/১৪৯, ফাতাওয়ায়ে ফকিহুল মিল্লাত : ১২/৪৩)

গ. সব চুল সমান করে কাটা।

মহানবী (সা.)-এর সুন্নত পালনের উদ্দেশ্যে সওয়াবের আশায় তাঁর নির্দেশিত পদ্ধতিতে চুল কাটালেও সেখানে সওয়াবের আশা করা যায়। মহান আল্লাহ সবাইকে জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে নবীজি (সা.)-এর সুন্নতগুলো অনুসরণ করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

চুল

মাইমুনা আক্তার, নিজস্ব প্রতিবেদক:

মানুষ স্বভাবজাতভাবেই অনুকরণপ্রিয়। প্রতিটি কাজেই তারা কাউকে না কাউকে অনুকরণ করতে পছন্দ করে। পোশাক থেকে শুরু করে চুলের স্টাইলেও মানুষের অনুকরণীয় ব্যক্তিত্ব পাওয়া যায়। তবে ভুল মানুষের অনুকরণ করলে বিপথগামী হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। রাসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি কোনো সম্প্রদায়ের অনুকরণ করবে, সে তাদের অন্তর্ভুক্ত হবে।(আবু দাউদ, হাদিস : ৪০৩১)

মুমিনের জীবনে একমাত্র অনুকরণীয় ব্যক্তিত্ব মহানবী (সা.) কিংবা যাঁরা মহানবী (সা.)-এর সুন্নত মোতাবেক জীবন গড়েছেন। এর বিপরীত মেরুর কাউকে অনুকরণ করতে গেলে হাদিসের ভাষ্যমতে বিপদে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।

সামনে ঈদ। পবিত্র ঈদে নিজেকে পরিপাটি রাখতে প্রত্যেক মানুষই সেলুনে ভিড় করবে। অনেকে আবার নতুন নতুন হেয়ারস্টাইল খুঁজবে।

বর্তমানে আমাদের দেশে যে হেয়ারস্টাইলগুলো জনপ্রিয়, তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে—শর্ট কাট বা আন্ডার কাট, ক্লাসিক কাট, ফেড কাট, ক্রু কাট, বাজ কাট, লেয়ার স্পাইক, ইমো সুইপ ইত্যাদি। পবিত্র ঈদের মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত করার জন্য নিজেকে পরিপাটি করতে গিয়ে এমন কোনো স্টাইলে চুল কাটানো উচিত হবে না, যেভাবে চুল কাটাতে নবীজি (সা.) নিষেধ করেছেন।

ইবনে ওমর (রা.) বলেন, আমি রাসুল (সা.)-কে ‘কাজা’ থেকে নিষেধ করতে শুনেছি। (বর্ণনাকারী ওবায়দুল্লাহ বলেন) আমি জিজ্ঞেস করলাম, ‘কাজা’ কী? তখন আবদুল্লাহ (রা.) আমাদের ইঙ্গিতে দেখিয়ে বললেন, শিশুদের যখন চুল কামানো হয়, তখন এখানে-ওখানে চুল রেখে দেয়। এ কথা বলার সময় ওবায়দুল্লাহ তাঁর কপাল ও মাথার দুই পাশে দেখালেন। ওবায়দুল্লাহকে আবার জিজ্ঞেস করা হলো, বালক ও বালিকার জন্য কি একই নির্দেশ? তিনি বলেন, আমি জানি না। এভাবে তিনি বালকের কথা বলেছেন।

ওবায়দুল্লাহ বলেন, আমি এ কথা আবার জিজ্ঞেস করলাম। তিনি বলেন, পুরুষ শিশুর মাথার সামনের ও পেছনের দিকের চুল কামানো দোষণীয় নয়। আর (অন্য এক ব্যাখ্যা মতে) ‘কাজা’ বলা হয়, কপালের ওপরে কিছু চুল রেখে বাকি মাথার কোথাও চুল না রাখা। তেমনিভাবে মাথার চুল এক পাশ থেকে অথবা অন্য পাশ থেকে কাটা। (বুখারি, হাদিস : ৫৯২১)

চুল কাটার সুন্নত পদ্ধতি

পুরুষের চুল রাখা ও কাটার ব্যাপারে শরিয়ত তিনটি পদ্ধতি নির্ধারণ করে দিয়েছে। ক. বাবরি চুল রাখা। বাবরি চুল রাখার তিনটি সুন্নত পদ্ধতি রয়েছে—

১.  ওয়াফরা তথা কানের লতি পর্যন্ত চুল রাখা। (আবু দাউদ, হাদিস : ৪১৮৫)

২.  লিম্মা তথা ঘাড় ও কানের লতির মাঝামাঝি পর্যন্ত চুল রাখা। (আবু দাউদ, হাদিস : ৪১৮৭)

৩.  জুম্মা তথা ঘাড় পর্যন্ত রাখা। (আবু দাউদ, হাদিস : ৪১৮৩)

খ. মুণ্ডিয়ে ফেলা। ইসলামের দৃষ্টিতে মাথা মুণ্ডিয়ে ফেলাও সুন্নত। (ফাতাওয়ায়ে মাহমুদিয়া : ৫/১৪৯, ফাতাওয়ায়ে ফকিহুল মিল্লাত : ১২/৪৩)

গ. সব চুল সমান করে কাটা।

মহানবী (সা.)-এর সুন্নত পালনের উদ্দেশ্যে সওয়াবের আশায় তাঁর নির্দেশিত পদ্ধতিতে চুল কাটালেও সেখানে সওয়াবের আশা করা যায়। মহান আল্লাহ সবাইকে জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে নবীজি (সা.)-এর সুন্নতগুলো অনুসরণ করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

আরও খবর

Sponsered content

WP Twitter Auto Publish Powered By : XYZScripts.com