সারাদেশ

ঠাকুরগাঁওয়ে বাজার কাঁপানো সেরা ৪৩ মণের বিগবস

  প্রতিনিধি ২১ জুন ২০২৩ , ১২:১৫:০৯ প্রিন্ট সংস্করণ

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধিঃ

আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষে ঠাকুরগাঁওয়ের কোরবানির বাজারে সবচেয়ে বড় চমক নিয়ে এসেছে ৪৩ মণের বিগবস। আকার আকৃতি আর হাতির মত বিশালদেহী গরুটি আসলেই বিগবস। গত বছর দাম রাখা হয়েছিল ৩০ লাখ টাকা। ওজন প্রায় ১৭’শ ৩০ কেজি বা ৪৩ মণ। সঙ্গে রয়েছে আকর্ষনীয় মোটরসাইকেল। মানুষ যেনো কিনতে পারে তাই এবারও বিগ বসের দাম অপরিবর্তিত রেখেছেন গরুটির মালিক। আলোচিত ও সাড়া জাগানো বিগবসকে দেখতে প্রতিদিন ভিড় জমাচ্ছেন শতশত মানুষ।

কোরবানির বাজার ধরতে বিগ বসকে নিয়ে ব্যস্ত বিগ বসের মালিক আফিল উদ্দিন। পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে দিনে দুইবার শ্যাম্পু দিয়ে গোসল করাতে হয় তাকে । একটু মুক্ত পরিবেশ পেলেই ছুটতে শুরু করে বিগ বস। কিন্তু যাতে ছুটে পালাতে না পারে সে জন্য তার জন্য নিরাপত্তারক্ষী কাজ করছেন বাড়ির সকলেই।

ঠাকুরগাঁওয়ের বিগবস’ নাম দেওয়া বিশালদেহী এ ষাঁড়টি মূলত এলসি জাতের। জেলার হরিপুর উপজেলার ডাঙ্গীপাড়া ইউনিয়নের সীমন্তবর্তী তালতলা গ্রামের বাসিন্দা আফিল উদ্দীন। তিনি দীর্ঘ ছয় বছর ধরে এ ষাড়টি শখের বসে লালন পালন করেছেন। সে এখন বিশাল আকৃতির হয়ে দাড়িয়েছে। ছয় বছর আগে মাত্র ৯০ দিন বয়স ও ২৭ কেজি ওজনের গরুটিকে কেনেন আফিল উদ্দিন। তখন থেকে প্রাকৃতিক খাবার ও ফলমূল খাইয়ে ষাড়টিকে বিশাল আকৃতির করেছেন তিনি। গত বছর গরুটির দাম ২২ লাখ পর্যন্ত উঠলেও বিক্রি করেননি তিনি। এবার আশা করছেন কাঙ্খিত দামে বিক্রি করতে পারবেন।

স্থানীয় লাবণি আক্তার নামে এক গৃহবধূ বলেন, নিজের সন্তানের মতো যতœ করে গরুটিকে বড় করেছেন আফিল দম্পতি। তাদের দেখে আমাদের এখানকার অনেকে এভাবে গরু লালন পালন করার আগ্রহ পেয়েছে ও অনুপ্রানিত হয়েছে। আর দূর-দুরান্ত থেকে দেখতে আসা দর্শনার্থীরা গরুটিকে দেখে অভিভুত হচ্ছেন।

ফারুখ হোসেন নামে এক দর্শনার্থী বলেন, এটাই আমার দেখা সবচেয়ে বড় গরু যা এর আগে কষনও দেখিনি। এবার ন্যায্য ও কাঙ্খিত মূল্যে গরুটি বিক্রি হবে প্রত্যাশা করছি।

আফিল উদ্দিন বলেন, প্রাকৃতিক উপায়ে খৈল, ভুসি, ভুট্টা, কলা, ভাত, খড়-ঘাস খাইয়েছেন। গরুটি লালন-পালনে বা মোটা তাজা করতে তিনি কোনো হরমোন বা স্টেরয়েড ব্যবহার করেননি। এছাড়াও ফল হিসেবে আপেল, কমলা, আঙুর, কলা ও ডাব খাওয়ানো হয়। এতে সাড়া দিনে প্রায় ২ হাজার ৫০০ টাকার খাবার খাওয়ানো হয় ।
এই ষাড়টিকে কোরবানির আশায় এতো বড় করেছি। তাই যাতে কোরবানির জন্য ক্রেতারা ক্রয় করতে পারেন সে জন্য এর দাম বাড়াইনি। গত বছর ৩০ লাখ টাকা দাম রেখেছিলাম ও ক্রেতাকে উপহার হিসেবে ১৬০ সিসির পালসার অথবা অ্যাপাচি আরটিআর মোটরসাইকেল দিতে চেয়েছিলাম। এবারও দেওয়া হবে।

জেলা প্রাণিসম্পদ সুত্রমতে, জেলায় এবার কোরবানির জন্য ৭৫ হাজার পশুর চাহিদার বিপরিতে প্রস্তুত রয়েছে ৮৩ হাজার গবাদিপশু। পশু খাদ্যের মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় গত বছরের তুলনায় এ বছর কোরবানি পশু কমেছে প্রায় ১০ হাজার । তবে গত বছরের তুলনায় সংখ্যাটি কম হলেও স্থানীয় চাহিদা মেটাতে সক্ষম এ সংখ্যা।

জেলার প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. আবুল কালাম আজাদ বলেন, আমার জানা মতে এমন বড় আকৃতির বা ওজনের দ্বিতীয় গরুটি এ জেলায় নেই। আফিল উদ্দিন এই ষাড়টিকে খুব যতœসহকারে মাংসের জন্য লালন পালন করেছেন। গরুটিকে কোনো খারাপ মেডিসিন প্রয়োগ করা হয়নি ও গরুটিকে নিয়মিত পরিদর্শন করে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

আরও খবর

Sponsered content

WP Twitter Auto Publish Powered By : XYZScripts.com