বরিশাল

বাবার লাশ নিয়ে বিপাকে ছেলে, ভিআইপি কেবিনে জায়গা দিলো- কর্ণফুলী-১১

  প্রতিনিধি ৪ মে ২০২৩ , ৬:৪০:২৯ প্রিন্ট সংস্করণ

ভোলা প্রতিনিধি:

দ্বীপ জেলা ভোলা তার যাতায়াতের অন্যতম প্রধান মাধ্যম হলো লঞ্চ। তবে এসব রুটে চলাচল করা লঞ্চ সার্ভিস নিয়েও রয়েছে নানা আলোচনা-সমালোচনা। এবার এসব আলোচনা সমালোচনা কাটিয়ে উদার মানবিকতার দৃষ্টান্ত দেখালেন কর্ণফুলী-১১ লঞ্চ কর্তৃপক্ষ।

রাজধানী ঢাকা থেকে বাবার মরদেহ নিয়ে গ্রামের বাড়ি চরফ্যাশনের উদ্দেশ্যে রওনা হলেন ছেলে। দ্রুত লঞ্চ ধরার জন্য বরফ, কফিন ছাড়া সাদা কাপড় পেঁচানো লাশ নিয়ে লঞ্চে উঠেন ছেলে ও স্বজনরা।

লাশটি লঞ্চের নিচতলায় রেখে চিন্তায় পড়ে যায় স্বজনরা। ঠিক এমন সময় কর্নফুলী-১১ লঞ্চ কর্তৃপক্ষ মানবিকতার দৃষ্টান্ত দেখালেন। তারা এগিয়ে গিয়ে স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে মরদেহটি লঞ্চের দ্বিতীয় তলার ভিআইপি এসি কেবিনে উঠিয়ে পরিবহন করার সুযোগ করে দেন।

লঞ্চ কর্তৃপক্ষের এমন উদারতা দেখে আবেগআপ্লুত হয়ে যান মৃতের স্বজনরা। এই মানবিকতাকে দৃষ্টান্ত বললেন যাত্রীরাও।

মঙ্গলবার (২ মার্চ) রাতে ঢাকা টু ভোলা নৌ-রুটে চলাচল করা কর্নফুলী-১১ লঞ্চে এমন দৃশ্য দেখা যায়।

মৃত ব্যক্তির ছেলে মো. মনির ঢাকা মেইলকে বলেন, আমার বাবা ঢাকা নিউরো সাইন্স হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। লঞ্চ পাবো না তাই কফিন ও বরফ ছাড়াই লাশ নিয়ে চরফ্যাশন নিয়ে যাওয়ার জন্য লঞ্চে উঠি।

আমার বাবার মৃতদেহকে এত সম্মান দিয়ে ভিআইপি এসি কেবিনে রাখা হবে, আমরা কখনো ভাবতে পারিনি। আমাদের পরিবারের পক্ষ থেকে লঞ্চ স্টাফদের কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানাই।

লঞ্চ যাত্রী কামরুল ইসলাম রুবেল ঢাকা মেইলকে বলেন, কর্ণফুলী-১১ লঞ্চ কর্তৃপক্ষ একটি মৃতদেহকে যে সম্মান দেখালো এ থেকে সকল লঞ্চ মালিক ও স্টাফরা শিক্ষা নেওয়া উচিত। আমরা চাই এমন মানবিকতা সকল লঞ্চের মাঝে ফুটে উঠুক।

কর্ণফুলী-১১ লঞ্চের কেবিন ইনচার্জ জাফর আহমেদ বলেন, রাত ১০টায় লঞ্চ ছাড়ার ৫ মিনিট আগে মরদেহটি নিয়ে লঞ্চে উঠে স্বজনরা। আমরা দেখলাম লাশের কফিন বরফ কিছুই ছিল না। এই জন্য লাশের যাতে কোনো সমস্যা না হয় আমাদের ভিআইপি ডিলাক্স এসি কেবিনে রাখার ব্যবস্থা করেছি। পরে সকালে লঞ্চটি চরফ্যাশন ঘাটে পৌঁছালে তাদের পরিবার মরদেহটি অ্যাম্বুলেন্সে বাড়িতে নিয়ে যায়।

লঞ্চ পরিচালক মো. সালাউদ্দিন জানান, এ খবরটি জানার পর আমরা লঞ্চ স্টাফদের সুন্দরভাবে ব্যবস্থা করার নির্দেশ দিয়েছি। সকল যাত্রীদের বিপদে পাশে আছি আমরা। ইনশাআল্লাহ ভবিষ্যতে আমাদের সকল লঞ্চে যাত্রীদের সর্বোচ্চ সেবা দিয়ে যাব।

উল্লেখ্য, গত কয়েক মাস আগেও ভোলার প্রতিটি লঞ্চে মরদেহ বহনযোগ্য অত্যাধুনিক সুবিধাযুক্ত শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কক্ষের দাবি জানিয়েছে ভোলাবাসী। সম্প্রতি কর্নফুলী লঞ্চ কর্তৃপক্ষের এমন উদার মানবিকতা দেখে প্রশংসা করছেন যাত্রীরা। যাত্রীরা বলছেন, ভবিষ্যতে যেন সকল লঞ্চের স্টাফরাও এমন মানবিকতায় এগিয়ে আসে।

আরও খবর

Sponsered content

WP Twitter Auto Publish Powered By : XYZScripts.com