সারাদেশ

বিরল রোগে আক্রান্ত দুই ভাই, অর্থাভাবে বন্ধ চিকিৎসা

  ফরিদপুর প্রতিনিধি: ২৪ জুলাই ২০২৩ , ২:০২:৪৭ প্রিন্ট সংস্করণ

ফরিদপুর প্রতিনিধি: ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলায় আবির হুসাইন নাঈম (১৪) ও নূর হোসেন (৪) নামে দুই ভাইয়ের শরীরে বাসা বেঁধেছে বিরল রোগ। এই অজানা রোগে আক্রান্ত হয়ে অসহ্য যন্ত্রণা নিয়ে দিনযাপন করছে তারা। এক সময় চিকিৎসা করালেও বর্তমানে টাকার অভাবে বন্ধ রয়েছে চিকিৎসা।   আলফাডাঙ্গা উপজেলার সদর ইউনিয়নের শুকুরহাটা গ্রামের চা বিক্রেতা হাবিবুর রহমানের ছেলে তারা। শিশু দুটির চোখ, নখসহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ফেঁটে গিয়ে ক্ষতের সৃষ্টি হয়েছে। গরম সহ্য করতে পারে না তারা। তিন/চার মিনিট পর পর শরীরে পানি ঢালতে হয় তাদের। শরীরের ক্ষত জায়গা থেকে রক্ত বের হতে থাকলে দেখা দেয় প্রবল শ্বাসকষ্ট। অনেক সময় হাত-পা কুঁকড়ে যায়।   খোঁজ নিয়ে ও শিশু দুটির পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, জন্মের পর থেকেই দুই ভাইয়ের শরীরে এই অজানা রোগ দেখা দিয়েছে। বিরল রোগে আক্রান্ত ওই দুই শিশুকে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে অনেক বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের কাছে নিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত রোগটিই শনাক্ত করা যায়নি। ভারত ও বাংলাদেশে চিকিৎসা করাতে গিয়ে ১২ থেকে ১৫ লাখ টাকা খরচ হয়েছে পরিবারটির। তাদের চিকিৎসা করাতে গিয়ে এখন ভিটে-মাটি ছাড়া কিছুই অবশিষ্ট নেই ওই পরিবারটির।   স্থানীয়রা জানান, ভারতের ভেলোর সিএমসি হাসপাতালের চিকিৎসকরা পুনরায় সেখানে চিকিৎসা নিতে যাওয়ার জন্য বললেও বর্তমানে পরিবারটি অর্থ সংকটে পড়েছে। এক চা দোকানি বাবার পক্ষে সব হারিয়ে দুই সন্তানের সুচিকিৎসা করানো দুঃসাধ্য হয়ে পড়েছে।   বর্তমানে অর্থাভাবে শিশু দুইটির সব রকম চিকিৎসা বন্ধ হয়ে গেছে। আবির ও নূর হোসেন আলফাডাঙ্গা উপজেলার সদর ইউনিয়নের শুকুরহাটা গ্রামের চা দোকানি হাবিবুর রহমান ও রাবেয়া বেগম দম্পতির সন্তান। দুই সন্তানের চিকিৎসার ব্যাপারে সমাজের বিত্তবানদের সহযোগিতা চেয়েছেন তারা।   মঙ্গলবার (১৩ জুন) সকালে উপজেলার সদর ইউনিয়নের শুকুরহাটা গ্রামের চা বিক্রেতা হাবিবুর রহমানের সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, ১৮ বছর আগে স্ত্রী রাবেয়া বেগমের সঙ্গে তিনি বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। তাদের প্রথম সন্তান সুরাইয়া এ রোগে আক্রান্ত হয়ে জন্মের ১০ মাস পর মারা যায়। এরপর আল্লাহ তাদের সংসারে দুইটি ছেলে ও একটি মেয়ে দিয়েছেন। বড় ছেলে আবির হুসাইন নাঈম ও চার বছরের শিশু নূর হোসেনও এ রোগে আক্রান্ত হয়। বড় ছেলে ইচাপাশা হাফেজিয়া নুরানি মাদরাসায় ৮ পারা হাফেজি শেষ করেছে। মেঝো মেয়ে সাদিয়া আক্তার সামিয়ার বয়স ৯ বছর। সেও ওই মাদরাসায় নুরানি বিভাগে তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ালেখা করে।   ২০১৮ সালে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের ভেলোর সিএমসি হাসপাতালে দুই ছেলেকে নিয়ে চিকিৎসা করিয়েছেন। করোনার পর ওই হাসপাতালে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বর্তমানে চা বিক্রি করে কোনোমতে সংসার চলছে। অর্থাভাবে বাচ্চা দুটির চিকিৎসা বন্ধ রয়েছে।   এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে আলফাডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রফিকুল হক বাংলানিউজকে বলেন, উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সরেজমিনে গিয়ে খোঁজ নেওয়া হবে এবং প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করা হবে পরিবারটিকে। এছাড়া ওই শিশু দুটিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করা হবে।

আরও খবর

Sponsered content

WP Twitter Auto Publish Powered By : XYZScripts.com