প্রতিনিধি ৫ এপ্রিল ২০২৩ , ২:৩১:৫৪ প্রিন্ট সংস্করণ
ভোলার লালমোহন উপজেলার লর্ড হার্ডিঞ্জ ইউনিয়নের আনন্দবাজার সংলগ্ন বুড়িরধোন খালের উপর নির্মিত সেতুটি ১২ মাস আগে ভেঙে গেছে। বছর পার হলেও ধ্বংসস্তুপে পরিণত হওয়া সেতুটির সংস্কার বা পুননির্মাণের জন্য কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। এতে দিনের পর দিন দুর্ভোগ পোহাচ্ছে দুই পাড়ের কয়েক হাজার মানুষ।
ভাঙা সেতুর উপর বাঁশের সাঁকো তৈরি করে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করলেও বন্ধ রয়েছে যানবাহন চলাচল। ফলে অতিরিক্ত সময়ে বিকল্প পথে গন্তব্যে পৌঁছাতে হয় স্থানীয়দের। আর বাড়তি সেই পথ পাড়ি দিতে গুনতে হচ্ছে অতিরিক্ত ভাড়া। কৃষিপণ্য আনা-নেওয়ায় চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে কৃষকদের।
স্থানীয় বাসিন্দা মমিনুল ইসলাম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আমরা চলাচল করতে পারছি না, ছেলে-মেয়েদের স্কুলে পাঠালেও সব সময় শঙ্কায় থাকতে হয়। সাঁকো থেকে পড়ে গিয়ে যে কোনো সময় দুর্ঘটনা ঘটারও আশঙ্কা রয়েছে। তাই অতি দ্রুত সেতুটি সংস্কার করা প্রয়োজন।
প্যায়ারী মোহন ও অন্নদাপ্রসাদ গ্রামের বাসিন্দা মো. শাকিল, রুবেল, মো. সাহেব আলী বলেন, এক বছরের মতো সময় ধরে ভেঙে খালের মধ্যে পড়ে রয়েছে সেতুটি। প্রয়োজনের তাগিদে বাঁশ দিয়ে একটি সাঁকো তৈরি করে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে। সেতুটি ভেঙে পড়ায় কোনো ধরনের যানবাহন চলছে না। যার কারণে আমাদের বহু পথ ঘুরে গন্তব্যে পৌঁছাতে হয়। তাই দুই গ্রামের বাসিন্দাদের দাবি, দ্রুততম সময়ের মধ্যে যেন সেতুটি নতুন করে নির্মাণ করা হয়।
স্থানীয় কৃষক রহমান মিয়া ঢাকা পোস্টকে বলেন, এক বছর আগে বন্যার সময় সেতু ভেঙে গেছে। এ পথে যাতায়াতে খুব সমস্যা হচ্ছে। যাতায়াতে অনেক পথ ঘুরতে হয়। এ সেতু ভেঙে থাকায় কৃষিপণ্য বাজারে নিতে ও ছেলে-মেয়েদের স্কুলে যেতে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। একজন অসুস্থ রোগীকেও উন্নত চিকিৎসার জন্য শহরে নেওয়া খুবই কষ্টকর হয়ে পড়েছে। দ্রুত সেতু নির্মাণ করা হলে আর ভোগান্তি থাকবে না।
লর্ড হার্ডিঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল কাশেম মিয়া ঢাকা পোস্টকে বলেন, ২০০০ সালের দিকে সেতুটি নির্মাণ করা হয়। এর বছর দুয়েক পর সেতুটি জরাজীর্ণ হয়ে পড়লে ইউনিয়ন পরিষদের কিছু অর্থ দিয়ে তা মেরামত করি। পরবর্তীতে একদিন মালবোঝাই ট্রলি খালের মধ্যে পড়ে গেলে সেতুটি ভেঙে যায়। সেতুটি এখানকার বাসিন্দাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এলাকাবাসীর দুর্ভোগের কথা ভেবে আমি বেশ কয়েকবার এলজিইডি অফিসে কথা বলেছি। তারা কেবল আশ্বাসই দেন। তাই আমি হাজার হাজার মানুষের দুর্ভোগ লাঘবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে দ্রুততম সময়ের মধ্যে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়ার জোর দাবি জানাচ্ছি।
এ বিষয়ে লালমোহন উপজেলা এলজিইডির উপ-সহকারী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, এ সেতুসহ উপজেলার আরও কয়েকটি জরাজীর্ণ সেতু নতুন করে নির্মাণের জন্য সদর দপ্তরে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। প্রস্তাবনাটি পাস হলে এসব সেতুর কাজ দ্রুততম সময়ের মধ্যে সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হবে।