প্রতিনিধি ১৬ এপ্রিল ২০২৩ , ১:৩৪:০১ প্রিন্ট সংস্করণ
অনলাইন ডেস্ক:
এ বিভাগে আইনগত সমস্যা নিয়ে পাঠকের প্রশ্নের জবাব দিচ্ছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার সাদিয়া আরমান
আমরা ভালোবেসে বিয়ে করেছিলাম প্রায় পাঁচ বছর আগে। তখন সনদ অনুযায়ী আমার বয়স ১৮ হয়নি। তাই বিয়ে রেজিস্ট্রি করা হয়নি। এখন আমি তিন বছরের এক কন্যাসন্তানের মা। এতদিন পড়াশোনা বন্ধ ছিল। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছি গত বছর। আমার স্বামী বছর দুয়েক ধরে কাজের সূত্রে বিদেশে থাকছেন। এর মাঝে আমার সঙ্গে এক ছেলের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। তাঁর প্রতি আমার তীব্র অনুভূতি রয়েছে। আবার আমার স্বামীকেও ছাড়তে পারছিলাম না সমাজের কথা ভেবে। সম্প্রতি আমি আমার স্বামীকে বিষয়টি জানিয়েছি। তবে তিনি সব জেনেও আমাকে ডিভোর্স দিতে রাজি নন। আমার বিয়ের তো কাগজপত্র নেই। এ বিয়ে ভেঙে দিতে কি আনুষ্ঠানিক কিছু করতে হবে? আমি কীভাবে ডিভোর্স নিতে পারব? আমার স্বামী ডিভোর্স না দিতে চাইলে আমার করণীয় কী? আমার মেয়েকে কি আমার সঙ্গে রাখতে পারব? যদি সে আমার সঙ্গে থাকে, তাহলে কি তার বাবার সম্পত্তিতে অধিকার পাবে?
তাসমিরা তামান্না (ছদ্মনাম)
উত্তরা, ঢাকা।
প্রিয় তাসমিরা
কোনো ব্যক্তির যদি অপ্রাপ্ত বয়সে বিয়ে হয়, তাহলে সে বিয়ে বাতিলযোগ্য বলে গণ্য হয়ে থাকে। অর্থাৎ প্রাপ্ত বয়স হওয়ার পর সে বিয়ে বাতিল ঘোষণা করার আবেদন করা যেতে পারে, যদি ওই ব্যক্তির কাছে বুদ্ধি-জ্ঞান হওয়ার পর প্রতীয়মান হয় যে, এই বিয়েতে তাঁর মর্জি নেই।
তবে প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার পর সময়ক্ষেপণ না করেই বিয়ে বাতিল করার আবেদন করতে হবে। যদি সময়ক্ষেপণ হয়ে যায় তাহলে সেই আবেদন আদালত আমলে নাও নিতে পারেন। এখানে আপনার বিয়ের রেজিস্ট্রি হয়নি, কিন্তু বিয়ে তো হয়েছে। রেজিস্ট্রেশন করা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে মূলত নারীদের বঞ্চিত, প্রতারিত বা স্বীকৃতির অভাবে লাঞ্ছিত হওয়া এড়ানোর জন্য। তবে রেজিস্ট্রেশন নাও যদি হয়, তাহলেও দাম্পত্য জীবনযাপন হয়েছে এবং এমন জীবনযাপনের ফলে পারস্পরিক দায়িত্ব ও অধিকারও জন্ম নিয়েছে। তা ছাড়া একজন সন্তানও জন্ম নিয়েছে। এ ব্যাপারটিও আদালত আমলে নেবেন। অন্যদিকে বিয়েবিচ্ছেদ বা তালাক চাইলে সময়ের বাধ্যবাধকতা নেই। আপনার সন্তানও বাবার সম্পত্তি থেকে তার অংশ নিশ্চিত পাবে।
ফলো করুন- 
ভিডিও দেখতে সাবস্ক্রাইব করুন সমকাল ইউটিউব
এবার আসা যাক এর বাইরে আরও কিছু বিষয়ে। আপনার বয়স কম এবং আপনি সম্ভবত আবেগতাড়িত। একজন ব্যক্তি আপনার জীবনসঙ্গী হিসেবে উপযুক্ত কিনা, সেটি নির্ভর করে অনেক ঘটনার ওপর। শুধু আবেগ বা আকর্ষণের ওপর এই সিদ্ধান্ত নেওয়াটা সঠিক নাও হতে পারে। এ বিষয়ে আরেকবার ভাবতে পারেন।
আপনি বোঝার চেষ্টা করতে পারেন, আপনার নতুন বন্ধু আপনাকে জীবনসঙ্গী হিসেবে নিতে ইচ্ছুক কিনা। সেটা বোঝার জন্য আপনার প্রতি তার আকর্ষণটাই যথেষ্ট নয়। আপনি দেখুন, তিনি আপনাকে তাঁর মা-বাবা ও পরিবারের অন্য সদস্যদের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন কিনা। আপনি তাঁকে সরাসরি জিজ্ঞেস করতে পারেন, তিনি আপনাকে বিয়ে করবেন কিনা। যদি উত্তর ইতিবাচক হয়, তাহলে আপনার মেয়ে আপনাদের সংসারে থাকতে পারবে কিনা– সেটি জিজ্ঞেস করুন। এ প্রশ্নগুলো করলেই বুঝতে পারবেন, নতুন বন্ধুর জন্য স্বামীকে ছেড়ে আসা উচিত হবে কিনা।